রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারে আইনজীবি খুন,ইমাম আটক

নিউজ ডেস্ক []মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট আবিদা সুলতানা খুন হয়েছেন। রোববার বড়লেখা উপজেলার মাধবগুল গ্রামে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। কি কারণে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিত করে জানা যায়নি। তবে ওই হত্যাকাণ্ডের পর বাড়ির ভাড়াটিয়া স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর আহমদ (৩৬) পালিয়ে গেলে তাকে সোমবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল বরুনা এলাকা থেকে আটক করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ।

আবিদা সুলতানা খুন হওয়ার খবরটি রোববার রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তার সহকর্মী মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। গতকাল সোমবার সকালে তারা ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আদালত বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল, মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজেদের ক্ষোভ ও ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মৃত আব্দুল হাজী আবদুল কাইয়ুমের তিন মেয়ে। তারা বিয়ের পর থেকে স্বামীর বাড়িতে থাকেন। তাদের মধ্যে আবিদা সুলতানা সবার ছোট। আবিদার তার স্বামী শরীফুল ইসলামের সঙ্গে মৌলভীবাজার শহরে বসবাস করতেন। মাঝে মধ্যে বাবার বাড়িতে আসতেন। বাড়ি দেখা শোনার পাশাপাশি ক্ষেতের ফসল ও চাল বাসায় নিতেন। আবিদা সিলেটের বিয়ানীবাজারে তার বোনের বাড়ি থেকে রোববার সকাল ৯টার দিকে জরুরি প্রয়োজনে পৈত্রিক বাড়ি বড়লেখার দক্ষিণ ভাগ (কাঠালতলী) ইউনিয়নের মাধবগুল গ্রামে যান। পরিবারের সদস্যরা বিকেল ৪টার পর থেকে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাকে না পেয়ে মাধবগুল গ্রামে পৈত্রিক বাড়িতে চলে আসেন। এ সময় পৈত্রিক বাড়ির ভাড়াটিয়া ঘরের একটি কক্ষে তালা দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই কক্ষের তালা ভেঙে আবিদার লাশ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।

বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইয়াসিনুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আইনজীবীর বাড়ির একটি কক্ষ থেকে গভীর রাতে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে আসা হয়। মরদেহের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আবিদার পৈতৃক বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া তানভীর আহমদ ঘটনার পর থেকে পালিয়ে যায়। তানভীর পলাতক থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার মা ও স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ। তবে ওই খুনের ঘটনার পর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও ঘটনাস্থলে ছুটছেন। এই খুনের নেপথ্যের ঘটনা ও খুনিকে শনাক্ত করতে তৎপর রয়েছেন। এদিকে খুনের পর মৌলভীবাজার আইনজীবী সমিতি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে দোষীকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুছ ছালেক তার গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘাতক তানভীর আবিদার পৈতৃক বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকত ও পাশের একটি মসজিদে ইমামতি করত। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আমানদি গ্রামের ময়নুল ইসলামের পুত্র।

Comments are closed.

More News Of This Category